কম খরচে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরীর উপায়
সুস্থ
ও সুন্দর থাকার জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যসম্মত ও সুষম খাবারের। তবে
স্বাস্থ্যসম্মত কিংবা সুষম খাবার মানেই দামি খাবার খেতে হবে এটা ভাবা উচিত
নয়। এই জন্য খাবারের অভ্যাস তৈরি করার জন্য প্রাথমিক পরিকল্পনার প্রয়োজন।
কম খরচে ভালো খাওয়ার পরামর্শ নিয়ে এবারের আয়োজন।
অনেকেই
অবাক হতে পারেন যে, কম খরচে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিভাবে পাওয়া যাবে?
সামান্য কয়েকটা জিনিসের রদবদল করে সহজেই এটা পাওয়া সম্ভব। মাসিক বাজার থেকে
শুরু করে রান্নার পদ্ধতি বদলে, উপযুক্ত সরঞ্জাম বেছে নিয়ে, নানা রকম খাবার
স্টোর করে—এ রকম অনেকভাবেই কম খরচে স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়া সম্ভব। রাজধানীর
বিভিন্ন জায়গায় গড়ে ওঠা নানা শপিংমলের বদৌলতে আমরা এখন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি
সুপার শপের কালচারে। যেখানে একই ছাদের নিচে আমরা পেয়ে যাই নিত্যপ্রয়োজনীয়
নানা সামগ্রী। আর এসব সুপার শপে প্রায়ই চলে নানা অফার। তবে কোনো অফার
নেওয়ার আগে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে, সেই অফারটা আপনার ক্ষেত্রে কতটা
উপযোগী। যেমন ৫ কেজি আটার সঙ্গে আধা কেজি চিনি ফ্রি দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে
আপনি আগে ঠিক করুন আপনার ৫ কেজি আটার প্রয়োজন সত্যিই আছে কি না। যদি
সত্যিই প্রয়োজন না থাকে তবে শুধুমাত্র ফ্রি পাওয়ার আশায় খরচ করবেন না। আর
যা কিছুই কিনুন না কেন, কখনওই কোয়ালিটির সঙ্গে আপস করবেন না।
আজকের কর্মব্যস্ত জীবনে হয়তো আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না প্রতিদিন বাজারে যাওয়া।
তাই সপ্তাহে যেকোনো একদিন সময় করে কিনে ফেলুন সারা সপ্তাহে আপনার
রান্নাঘরে যা যা লাগবে। পারলে বাজারে যাওয়ার আগে একটা লিস্ট বানিয়ে ফেলুন।
এমনটা করলে দোকানে গিয়ে বেশি চিন্তা করতে হবে না কী কী কিনতে হবে। কিছু
কিছু জিনিস যেমন চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি, লবণ, তেল ইত্যাদি পারলে মাসের
প্রথমেই কিনে ফেলুন। যেসব সবজি তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায় সেগুলো বেশি দিন আগে
না কেনাই ভালো। কারণ এতে একদিকে যেমন খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়, অন্যদিকে
টাকাও বাজে খরচা হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের কাজ করার পদ্ধতি সামন্য রদবদল
করলেই একই সঙ্গে খরচও বাঁচবে এবং খাবারের পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে।
স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের উপকারিতা
ভালো
খাওয়া, আরও যথার্থভাবে বলতে গেলে স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করার কয়েকটি বিশেষ কারণ হলো—
Φ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেলে সহজেই কোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
Φ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার আপনার প্রডাক্টিভিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
Φ আপনার ডায়েটে যদি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার থাকে, তাতে আপনার এনার্জি বাড়বে কয়েকগুণ।
সবচেয়ে বড় কথা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার আপনাকে ভেতর থেকে করবে অনেক স্ট্রং।
Φ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার আপনার প্রডাক্টিভিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
Φ আপনার ডায়েটে যদি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার থাকে, তাতে আপনার এনার্জি বাড়বে কয়েকগুণ।
সবচেয়ে বড় কথা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার আপনাকে ভেতর থেকে করবে অনেক স্ট্রং।
রান্নার সময় খাবারের পুষ্টিগুণ বজায় রাখার কৌশল
Φ রান্নার
সময় সবজি ঠিকমতো রান্না না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়।
ফুড ভ্যালু বজায় রাখার জন্য রান্নার পদ্ধতিতে নজর দেওয়া বিশেষ জরুরি। এতে
খরচও কমবে, ভালো মানের খাবারও তৈরি করা সম্ভব হবে।
Φ তাজা শাক-সবজি দিয়ে রান্না করার চেষ্টা করুন।
Φ দিনের পর দিন ফ্রিজে স্টোর করা সবজি রান্না করবেন না।
Φ রান্নার আগে সবজি ধুয়ে নিয়ে কাটুন।
Φ সবজি কাটার পর বেশিক্ষণ ধরে পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন না। এতে সবজির ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়।
Φ পানি ফুটতে শুরু করলে তবেই সবজি দিন।
Φ মশলা দিয়ে রান্নার করার সময় মশলা কষানো হলেই সবজি ও গরম পানি দিন। তারপর কম আঁচে ঢেকে রান্না করুন।
Φ রান্না করার পর গরম গরম পরিবেশন করুন।
Φ ফ্রিজে পড়ে থাকা পুরোনো রান্না করা খাবার বারবার গরম করবেন না। এতে খাবারে উপস্থি ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়।
Φ রান্নার সময় সোডা ব্যবহার করবেন না। এতে খাবারের সব ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়।
স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট এর নমুনা
কম খরচে ব্যালান্স ডায়েটসকালে ঘুম থেকে উঠে আধঘণ্টা পর ২ থেকে ৩ গ্লাস পানি পান করুন।
সকালের নাস্তা
কলা, আটার তৈরি রুটি বা পরোটা (সাথে ১ চামচ ঘি দিতে পারেন। কারণ খাবারে একবারে ফ্যাট না থাকা ঠিক নয়)। সাথে ১ চা চামচ সরিষার তেলে তৈরি আলু ও বাঁধাকপির তরকারি।
কলা, আটার তৈরি রুটি বা পরোটা (সাথে ১ চামচ ঘি দিতে পারেন। কারণ খাবারে একবারে ফ্যাট না থাকা ঠিক নয়)। সাথে ১ চা চামচ সরিষার তেলে তৈরি আলু ও বাঁধাকপির তরকারি।
হালকা নাস্তা
দুপুরের খাবারের ২ ঘণ্টা আগে হালকা নাস্তায় ২ থেকে ৩টা খেজুর।
দুপুরের খাবারের ২ ঘণ্টা আগে হালকা নাস্তায় ২ থেকে ৩টা খেজুর।
দুপুরের খাবার
আটার রুটি বা ভাত। সরিষার তেলে রান্না করা আলু, কুমড়া, বেগুন ও অন্য সবজির তরকারি। সাথে মুগ ডাল।
আটার রুটি বা ভাত। সরিষার তেলে রান্না করা আলু, কুমড়া, বেগুন ও অন্য সবজির তরকারি। সাথে মুগ ডাল।
বিকালের নাস্তা
সন্ধ্যার আগে বিস্কিট ও এক কাপ চা বা কফি। চাইলে টমেটো, পেঁয়াজ, বাদাম, লুবণ, লেবু, গোলমরিচের গুড়া দিয়ে তৈরি মসলা মুড়ি।
সন্ধ্যার আগে বিস্কিট ও এক কাপ চা বা কফি। চাইলে টমেটো, পেঁয়াজ, বাদাম, লুবণ, লেবু, গোলমরিচের গুড়া দিয়ে তৈরি মসলা মুড়ি।
রাতের খাবার
ভাত, মাছ, সালাদ, শাক ও কুমড়া দিয়ে তৈরি সবজি।
ভাত, মাছ, সালাদ, শাক ও কুমড়া দিয়ে তৈরি সবজি।
তথ্যসূত্র: ইত্তেফাক/কড়চা
Comments
Post a Comment